ব্রিটেনে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে বাংলাদেশি পরিবার

স্কটল্যান্ডে নতুন জীবন শুরু করার পরপরই কর্নোভাইরাসে পিতার মৃত্যুতে একটি বাংলাদেশি পরিবার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয়েছে। পরিবারটির বিশ্বাস, ৪৯ বছর বয়সী মফিজুল ইসলাম এডিনবার্গের বাসা থেকে মিডলোথিয়ান পিজ্জা আউটলেটের চাকরিস্থলে যাবার পথে প্রতিদিন তিন ঘণ্টা করে বাস ভ্রমণের সময় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
৫ এপ্রিল তিনি মারা যান এবং শহরের একটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তবে তার স্ত্রী এবং শিশুরা আইসেলোশনে ছিল বলে দাফনে যোগ দিতে পারেনি। বন্ধুর মতে, তার মৃত্যু তাদের ‘সম্পূর্ণ অসহায়’ করে ফেলেছে। শাহা হক বলেন, পরিবার অর্থ এবং খাবার সঙ্কটে পড়েছে, তবে কমিউনিটি তাদের সহায়তা করবে।
এডিনবার্গে আসার পর মফিজুলের সাথে বন্ধুত্বকারী বাংলাদেশি দোকানি বলছিলেন, ‘তাদের কাছে কোন ডকুমেন্ট নেই, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, কিছুই নেই। তাদের সমস্যা আছে’। মফিজুল ও তার ১৯ বছরের ছেলে আজহারুল গত বছর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন।

মার্চের শুরুতে তারা এডিনবার্গের ওয়েস্টার হাইলে স্থায়ী হয় এবং তার স্ত্রী আফরোজা ও ১৩ বছর বয়সী মেয়ে সাদিয়া তার সাথে যোগ দেয়। এসময়ই স্কটল্যান্ড কোভিড-১৯-এর প্রথম আক্রান্তের ঘটনা নিশ্চিত করেছিল। যুক্তরাজ্য লকডাউন ঘোষণার পর মফিজুল কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু তখন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারা যায়। তাকে এডিনবার্গ কবরস্থানের মুসলিম বিভাগে দাফন করা হয়েছিল।

তার বিধবা স্ত্রী বলছিলেন, ‘আমার স্বামী খুব ভাল মানুষ ছিলেন। তিনি আমার জন্য একজন ফেরেশতার মতো ছিলেন। আমি আপনাকে বলতে পারি না যে আমি তার সম্পর্কে কেমন অনুভব করছি। তিনি খুব দয়াবান মানুষ ছিলেন’।

তারা এখন গভীর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি। কয়েক বছর আগে সেখানে বসবাস করায় তাদের ইতালির স্থায়ী আবাসন কার্ড রয়েছে। তারা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারত, কিন্তু আফরোজা তার স্বামীকে যেখানে দাফন করা হয়েছে সেই দেশ ছেড়ে যেতে চান না।

তার আশা, তার বাচ্চারা স্কটল্যান্ডে পড়াশুনা করতে পারবে। তিনি এবং তার স্বামী সেটাই চেয়েছিলেন। তাদের প্রতি সমর্থন রয়েছে পরিবারের বন্ধু শাহা হকের। তিনি মফিজুলের কবরের জন্য অর্থ দিয়েছিলেন। তিনি আশা করেন, মফিজুলের ছেলে আজহারুল কাজ পেতে সক্ষম হবে।
আজহারুল বলেন, ‘আমরা আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে খুব চিন্তিত, কারণ আমাদের বাবা নেই। তিনি ছিলেন আমাদের জন্য সবকিছু এবং এখন আমরা কেবল নিরাশ’।